আওয়ামীলীগের দূর্গে হানা দিতে চায় বিএনপি
সব সময়ই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের দখলে রয়েছে পটুয়াখালী -৩ আসন। এ আসনটিতে
রয়েছে দলটির বিশাল ভোট ব্যাংক। প্রার্থী মনোনয়নে ভুল হলে কিংবা সাংগঠনিক
ভাবে কিছুটা দুর্বল হলে আসন্ন একাদশ নির্বাচনে এ সুযোগ নিয়ে ঘুরে দাঁড়াত
চাইবে বিএনপি। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে
ততই নির্বাচনী হাওয়ার উত্তাপ ছড়াচ্ছে গ্রাম গঞ্জ থেকে শুরু হয়ে শহরের
অলিতে-গলিতে। প্রতিটি টি স্টলে এখন প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে
চলছে আলোচনা সমালোচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সমর্থকরা
যার যার প্রার্থীর স্বপক্ষে আলোচনার ঝর তুলছেন।আর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা
ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দলীয় সাংগঠিনক কার্যাক্রমে অংশ গ্রহন ছাড়াও
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের অনুগত নেতা কর্মী ও সাধারন ভোটারদের আর্থিক
অনুদান সহ নানা উপহার সামগ্রী প্রদান করে তাদের দৃষ্টি আকর্শনের চেষ্টা
চালাচ্ছে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিশ্বাস বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হলে এ
আসনে বিপুল ভোটে বিজয় হবে নৌকার প্রার্থী।আর বিএনপি নেতা কর্মীরা বলেছেন,
বিএনপির ভোট আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছেন।বিএনপির গ্রুপিং অবসান হলে এবং অবাধ
সুষ্ঠ ও নিরাপেক্ষ নির্বাচন হলে ধানের শীষের প্রার্থীর বিজয় অসম্ভব নয়।
দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন, গলাচিপা উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা
নিয়ে গঠিত পটুয়াখালি-০৩ আসন বরাবরই আওয়ামীলীগের আধিপত্য। ১৯৮৬ সালের
নির্বাচন ছাড়া প্রতিবারেই আওয়ামীলীগ বিজয় হয়ছেন। নৌকার নমিনেশন মানেই বিজয়
নিশ্চিত আর এ কারনে আওয়ামীলীগের নমিনেশন প্রত্যাশীর সংখ্যাও বেশী।আসন্ন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় এখন
পর্যন্ত যারা মাঠে রয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন বর্তমান এমপি ও
সাবেক বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, দশমিনা উপজেলা
আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল আজীজ, দশমিনার কৃতি সন্তান পটুয়াখালী আওয়ামীলীগের
ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক কাজী আলমগীর, দশমিনা উপজেলা পরিষদের সুযোগ্য
চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন শওকত, বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় নেতা দশমিনা সদর
ইউনিয়নের সুযোগ্য চেয়ারম্যান এ্যাড. ইকবাল মাহমুদ লিটন, বর্তমান প্রধান
নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার ভাগ্নে এসএম শাহাজাদা, ঢাকা মহানগর
দক্ষিন আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ ফোরকান মিয়া,কেন্দ্রীয় যুবলীগ
নেতা কামরান শাহীদ প্রিন্স মাহাব্বাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিন সেচ্ছাসেবক
লীগের সাধারন সম্পাদক ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য মুহাম্মদ আরিফুর
রহমান টিটু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা নান্টু, জেলা কৃষক লীগের
সভাপতি তছলিম সিকদার, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও গলাচিপা
উপজেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ, গলাচিপা উপজেলা
আওয়ামীলীগ নেতা শাহ আলম, সাবেক ছাত্র নেতা রাজু আহম্মেদ প্রমুখ।বিএনপির এখন
পর্যন্ত তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন গলাচিপা উপজেলা
বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পটুয়াখালী জেলা বিনপির সহ-সভপতি সাবেক এমপি আলজাহ্ব
মোঃ শাহ জাহান খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যও ঢাকা বিশ্ব
বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন এবং কেন্দ্রীয় নেতা উপজেলা বিএনপির
সভাপতি গোলাম মোস্তফা, কর্নেল এসাহাক মিয়া ও ব্যারিষ্টার আশিকুর
রহমান।অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন চরমোনাই পীরের ইসলামী
আন্দোলনের বাংলাদেশের মোঃ কামাল হোসেন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দলের (জাসদ)
এ্যাডঃ মোঃ হাবিবুর রহমান। সম্ভাব্য হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্য থেকে যাদের
নাম উঠে আসছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বর্তমান এমপি আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন
একজন ত্যাগী,
পোড়খাওয়া , ধৈর্যশীল, দক্ষ ও প্রবিন রাজনীতিবিদ। তিনি
সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজী, ঘুষ দূর্নিতী দমনে সর্বদা সচেষ্ট থাকে যার
কারনে এলাকার জনগন শান্তিতে বসবাস করতে পারে। সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির
কথা আলোচনায় আসলেও তার অতীত কর্মকান্ড, আওয়ামী বিরোধী কথা বর্তা তার
ভবিষ্যত রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কু-প্রভাব ফেলবে বলে অনেকে মতামত দেন। এছাড়া
অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকায় অসহায় জনগনের মাঝে বিভিন্ন ধরনের
সাহায্য সহযোগিতা করে নিজস্ব কিছু অনুসারী সৃষ্টি করেছেন। আর বিএনপি
নেতাদের মধ্যে শাহজাহান খানকে এগিয়ে রেখেছেন অনেক নেতাকর্মী কারন হিসাবে
এলাকার মানূষ বলছেন সে একজন কর্মীবান্ধব নেতা এক সময় গলাচিপা উপজেলা
বিএনপির নেতা কর্মীদের তিনিই সুসংগঠিত করে রেখেছিলেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি
নেতা হাসান আল মামুন এলাকায় বিশেষ করে যুব শ্রেনীর মাঝে ক্লিন ইমেজের
উদীয়মান নেতা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নেতা আলহাজ্ব
গোলাম মোস্তফারও রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা । আওয়ামীলীগের আ খ ম জাহাঙ্গীর
হোসাইন এর মনোনয়ন প্রসঙ্গে দশমিনা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ নাসির
পালোয়ান বলেন উপজেলার সকল স্থরে রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা সাধারন মানুষের
কাছেও তিনি আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক।। দলের প্রার্থী হিসাবে আবারও তাকে
নমিনেশন দিলে এ আসনটি সুরক্ষিত থাকবে। অন্যান্য সকল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন
প্রত্যাশীরা বলছেন গত কয়েক বছর ধরে এলাকার উন্নয়নে তারা বিভিন্ন ভাবে অবদান
রাখছে তাদের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা তাই তারা নমিশনের দাবীদার।আর বিএনপির
নমিনেশন প্রতাশীদের ও একই কথা। বিএনপি ও আওয়ামীলীগের স্থানীয় কর্মী
সমর্থকরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করবেন বলে
তারা মতামত দেন।
