সারা দিন কী করেন জাকারবার্গ?
সোর্স:
সিএনএন
ফেসবুকের
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। ৩৩ বছর বয়সী এই মানুষটির মোট সম্পদের
পরিমাণ ৭ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি। ব্লুমবার্গের বিলিওনেয়ার্স সূচকে
বিশ্বের পঞ্চম ধনী ব্যক্তি তিনি। তবে খুব বেশি বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত নন
জাকারবার্গ। অন্তত তাঁর গাড়ি, পোশাক, চালচলনে প্রাচুর্যের ভাব নেই। তিনি
গিভিং প্লেজের সদস্য।
স্ত্রী
প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে সময় কাটান জাকারবার্গ সোর্স: দ্য
টেলিগ্রাফ
‘দ্য গিভিং
প্লেজ’ শীর্ষক সংগঠনটি বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস ও
ওয়ারেন বাফেটের উদ্যোগে গড়ে তোলা একটি জনকল্যাণমূলক সংগঠন। এ ছাড়া তিনি চ্যান জাকারবার্গ
ইনিশিয়েটিভ নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা। নিজের সম্পদের বেশির
ভাগ দাতব্যকাজে ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্ক জাকারবার্গ। ২০০ কোটি ব্যবহারকারীর
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নানা দায়িত্ব
পালন করতে হয় জাকারবার্গকে। এর মধ্যেও তিনি সময় করে ব্যায়াম ও ভ্রমণ করেন।
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। চলুন জেনে আসি কেমন করে গড়পড়তা দিন কাটে জাকারবার্গের।
ঘুম থেকে উঠে সপ্তাহে তিনদিন ব্যায়াম করেন জাকারবার্গ। ছবি:
ফেসবুক
খুব ভোরে
ঘুম থেকে ওঠেন না জাকারবার্গ। বাড়িতে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমান সফটওয়্যার লাগিয়ে
রেখেছেন। ওই সফটওয়্যারকে অনেক কাজের নির্দেশ দেওয়া থাকে। নিশ্চয়ই ঘুম থেকে ডেকে
দেয় জার্ভিস নামের ওই সফটওয়্যার! এ ছাড়া স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান তো রয়েছেন।
জাকারবার্গের দুই মেয়ে ম্যাক্স ও আগস্ট পাশেই থাকে। আটটার আগে ঘুম থেকে ওঠা হয় না
জাকারবার্গের। ফেসবুকের এক লাইভ অনুষ্ঠানে জাকারবার্গ বলেছিলেন, সকাল আটটায় ঘুম ভাঙার পর তাঁর প্রথম কাজ স্মার্টফোনে ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ দেখা।
কুকুর
বিস্টকে নিয়ে হালকা
হাঁটাহাঁটি আর দৌড়ে কিছুটা সময় কাটান জাকারবার্গ সূত্র:বিজনেস
ইনসাইডার
চারপাশে
কী ঘটছে, ফেসবুক থেকে
সব জেনে নেওয়ার পর শুরু হয় ব্যায়াম। সপ্তাহে তিন দিন ব্যায়াম করেন তিনি। খুব বেশি
ব্যায়াম করেন না। পোষা কুকুর বিস্টকে নিয়ে হালকা হাঁটাহাঁটি আর দৌড়ে কিছুটা সময়
কাটান তিনি।
প্রিয়
কুকুর বিস্ট সূত্র:
টাইম
ব্যায়াম
শেষে হাতমুখ ধুয়ে নাশতার টেবিলে যান। নাশতায় অবশ্য খুব বেশি কিছু খান না তিনি।
তাঁর পছন্দের খাবারও খুব বেশি কিছু নয়। সকালের অনুভূতির ওপর ভিত্তি করে নাশতা ঠিক
করে নেন। জাকারবার্গ বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করেন না তিনি।
সূত্র:
দ্য ডেইলি মেইল
সকালের
কাজ শেষে শুরু হয় অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি। পোশাক নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা নেই
তাঁর। তিনি তো বিশ্বজুড়ে ট্রেডমার্ক পোশাক পরার জন্য পরিচিত। জিনস, স্নিকার আর ধূসর টি-শার্ট তাঁর পোশাক। যেখানেই যান তাঁর এই পোশাক। তবে
মাঝেমধ্যে স্যুট-টাই পরেন। ২০১৪ সালে ওয়ারডোর্ব সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, আমি জীবনটাকে পরিছন্ন রাখতে চাই, যাতে
কমিউনিটিকে ভালোভাবে সেবা দেওয়ার পরিবর্তে অন্য বিষয় নিয়ে কম মাথা ঘামাতে হয়।
অফিসে ১২
জন কর্মী জাকারবার্গের ফেসবুক পেজ সামলান। ছবি: ফেসবুক
জাকারবার্গ
প্রতি সপ্তাহে ফেসবুকের অফিসে ৫০ থেকে ৬০ ঘণ্টা সময় দেন। এর বাইরে অবশ্য ফেসবুকের
উন্নতি নিয়ে বিভিন্ন চিন্তাভাবনা সব সময়ই করেন। সিএনএনকে একবার জাকারবার্গ
বলেছিলেন, ‘বিশ্বকে
কীভাবে যুক্ত করা যায় এবং কমিউনিটিকে উন্নত করা যায়, তা
নিয়ে ভেবে সময় পার করি।’ তবে এ সময় অফিস বা মিটিংয়ের
সঙ্গে যুক্ত নয়। এগুলো আসল কাজের বাইরে।
স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে সময় কাটার জাকারবার্গ। ছবি: ফেসবুক
এ বছরের
ভার্জের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকসহ জাকারবার্গের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে যেসব চ্যানেল
আছে, সেগুলো চালাতে জাকারবার্গ সরাসরি কিছু সাহায্য করেন।
এ কাজে তাঁর এক ডজন কর্মী আছে। ফেসবুক পেজে অযৌক্তিক মন্তব্য মুছে ফেলাসহ ফেসবুক
পেজের বিভিন্ন হালনাগাদ কাজে এ কর্মীরা সাহায্য করেন।
সূত্র:বিজনেস
ইনসাইডার
যখন কোনো
কাজ থাকে না, তখন বিভিন্ন
বিষয় শেখার চেষ্টা করেন জাকারবার্গ। তিনি এভাবেই মান্দারিন শিখেছেন। এ ছাড়া তিনি
বই পড়েন।
সূত্র:
ইনকর্পোরেটেড, ব্যবসা
ইনসাইডার, কোয়ার্টজ
২০১৫
সালে তিনি একবার নিজেকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন যে প্রতি দুই সপ্তাহে একটি নতুন বই
পড়বেন। বই পড়ার বিষয়টি তিনি এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন।
ম্যাক্স ও আগস্ট নামে দুই মেয়ের বাবা জাকারবার্গ। মেয়েদের বই পড়ে
শোনান তিনি। ছবি: ফেসবুক
… মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা …সাথে
… এবং তার ব্যক্তিগত সেলিব্রেটি বন্ধু ভিন ডিজেলের সঙ্গে।
জাকারবার্গের
দৈনন্দিন কাজের বিষয়টি নির্ভর করে তাঁর ভ্রমণের ওপর। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী
হিসেবে তাঁকে প্রচুর ভ্রমণ করা লাগে। তিনি বিশ্বের বড় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন
পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
