শিরোনাম

২০২০-২১ মুজিব বর্ষ : এখন থেকেই সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে

:: ড. কাজী এরতেজা হাসান ::
২০২০ ও ২০২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ ঘোষণার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত এই মুজিব বর্ষ পালিত হবে। আর এই ভিশনটি হঠাৎ করেই আসেনি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে এক অবিস্মরণীয় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে এক ঐতিহাসিক ফ্রেমে নানা রঙে রাঙিয়ে রাখতে ইচ্ছুক। সারা দেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, এমনকি ওয়ার্ড পর্যায় থেকেও কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যা সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মুজিব বর্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি পালন হবে। যাতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে।
কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলেসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়েও বহুমুখী কর্মসূচি করা হবে; খেলাধুলা নাটক, আর্টসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করা হবে। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পর্যন্ত বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ২০২০-২১ সাল মুজিব বর্ষ হিসেবে পালিত হবে। এই সময় জাতীয় ও দলীয় অন্য দিবসগুলোও পৃথকভাবে পালন হবে। এ জন্য আমরা মনে করি এখন থেকে সরকারকে ব্যাপক কর্মযজ্ঞের প্রস্তুতি নিতে হবে। এ জন্য প্রথমেই স্থির দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে কোনো মূল্যেই হোক ফের আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নির্বাচিত করে আনা। আর এ লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেয়া হবে সেখানেও এমনভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে যাদের প্রোফাইলে কোনো প্রকার নেতিবাচক ভাবমূর্তি বা দাগ নেই। ছাত্রলীগের একটি অংশ যারা প্রতিনিয়ত নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে সরকারের ভামমূর্তি নষ্ট করতে সচেষ্ট তাদেরকে এখন থেকেই কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে হবে। প্রয়োজনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে করে তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের মনে কোনো প্রকার বিরূপ প্রভাবের সৃষ্টি না করতে পারে। আর গত দশ বছরে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভিতরে যেসব ‘হাইব্রিড’ বা ‘কাউয়া’ জাতীয় লোকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, এখন থেকেই তাদের ঝাড়েমূলে বহিষ্কার করতে হবে। নয়তো তারা আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এমন সব ‘সাবোটাজ’ করতে পারে যাতে করে ক্ষমতাসীন দলটির জন্য ফের ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী ‘মুজিব বর্ষ’ উদ্যাপন করার যে ঘোষণা দিয়েছেন এখন থেকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে যা-যা করণীয় শ্রেণিবদ্ধভাবে তার সবই করতে হবে। দেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। একটি জাতীয় পতাকা দিয়ে গেছেন। তাঁরই দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল আজকের স্বাধীনতা। কাজেই তাঁর সেই রক্তের ঋণ আমাদের তো শোধ করতেই হবে। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের কারণে বাংলাদেশের মানুষ আজ সুখে-শান্তিতে বাস করছে।
বাংলাদেশ আজ ক্ষুধামুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এর সবই ঘটছে সেই স্বাধীনতার স্থপতি মুজিবকন্যা যুগের স্বপ্নদ্রষ্টা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে ধাবমান। স্যাটেলাইট বসেছে মহাকাশে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আজকে যে বাংলাদেশের রূপ আমরা পেয়েছি, সেটা যেন ফের কোনো অশুভ কালো শক্তির প্রভাবে ভেস্তে না যায় সেজন্য এখন থেকেই সরকারকে যা-যা করণীয় তার সব কিছুই যে কোনো মূল্যে প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই আশা করি আমরা আগামী ২০২০-২১ সালে ‘মুজিব বর্ষ’ পালন করতে পারবো। বাংলাদেশ পেরিয়ে যাবে নিশ্চিতরূপে এক সম্ভাবনার বাস্তবায়ন শেষে আরেক নতুন সম্ভাবনার দিগন্তের দিকে।
Collected Vorer pata...