এক মাত্র ছেলের বিচার দেখে মরতে চায় বাবা মোতালেব,মা মোর্শেদা বেগম।
ফয়েজ আহমেদ,দশমিনা প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর
দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব
মৃধার ছেলে মামুন মৃধা বিগত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয়
নেত্রী বর্তমান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার জন সভায় যোগ দিতে কবি
নজরুল কলেজের ছাত্রাবাস থেকে ছুটে যান প্রিয় নেত্রীর বক্তব্য শুনতে বঙ্গ
বন্ধু এ্যাভিনিউস্থ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায়। মঞ্চের ঠিক দক্ষিন
পার্শে দাড়িয়িছিল মামুন। তার ঠিক কয়েক মিনিটের মধ্যেই তৎকালীন জামাত বিএনপি
জোট সরকারেে লেলিয়ে দেয়া রক্ত পিপাসু সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গ্রেনেডের
স্পিলিন্ডারের আঘাতে মুহুর্তে বেশ কয়েকটি তরতাজা জলজ্যান্ত নিরিহ মানুষ
লুটিয়ে পরে মাটিতে। প্রত্যাক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে,মাত্র কয়েক সেকেন্ডের
মধ্যে নিক্ষিপ্ত গ্রেনেডের স্পিলিন্ডারের আঘাতে কারো হাত নেই,পা নেই,আবার
কারো শরীরের মাংশগুলো তুলার মত উড়ে যে কোথায় পরেছে, দেখতেও পায়নি কেউ।
মহিলা নেত্রী আইভি রহমানসহ নিহত হন ২৪জন। আহত কয়েক শত। পরম সৌভাগ্যক্রমে
প্রানে বেঁচে যান তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ
হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন নেতা। ঘটনাস্থলে নিহত ২৪জনের একজন ছিল দশমিনার আলীপুর
ইউনিয়নের কবি নজরুল ইসলাম কলেজের মেধাবী ছাত্র মাসুন মৃধা।বাবা মোতালেব
মৃধার তিন কন্যা ও একমাত্র পুত্র সন্তান এই মামুন। বড় আশায় বুক বেধে
মামুনকে পাঠান ঢাকার কবি নজরুল কলেজে। মামুন প্রায়শই বলতো বাবা,তুমি
দেখে,ডিগ্রীটা শেষ করে বেড়ুতে পাড়লেই আমার একটা ভাল চাকরী হয়ে যাবে। তখন আর
আপনার কোন চিন্তা করতে হবে না। আমার তিন বোনের পড়া লেখা শেষ করে আমিই ওদের
ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেব। তখন আপনাকেও আর কোন কাজ করতে হবে না। বাবা
মোতালেবের আনন্দে বুক ভরে ওঠে একমাত্র ছেলে মামুনের লেখা চিঠি পড়ে। তখন কে
জানতো, ছেলে মামুনের লেখা বাবার কাছে এটাই হবে জীবনের শেষ চিঠি? তাই ১৪ বছর
অতিবাহীত হলেও ছেলে মামুনের সেই চিঠির ভাষাগুলো যেন আজও চোখের সামনে ভেষে
ওঠে বেদনার অশ্রু হয়ে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বেদনাদায়ক ভার বহন হচ্ছে,বাবার
কাঁধে সন্তানের লাশ। তাই শত ব্যাথাকে সহ্য করে হলেও আজও বাবা মোতালেব মৃধা
প্রতিটা প্রহর,প্রতিটি মুর্হুত পাড় করছেন, একমাত্র সন্তান মামুনের খুনীদের
শুধু ফাঁসির রায় নায়,সে আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। আর তাকেই মরেও একটু শান্তি
পেতে চান বাবা মোকালেব, মা মোর্শেদা ও নিহত মামুনের ভাই হারানো তিন বোন।